বাংলাদেশে আয়কর: হিসাব পদ্ধতি এবং বিস্তারিত বিশ্লেষণ

income

বাংলাদেশে আয়কর আয়কর অধ্যাদেশ, ১৯৮৪ অনুযায়ী নিয়ন্ত্রিত এবং এটি পরিচালনা করে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। আয়কর একটি প্রগতিশীল কর ব্যবস্থা, যার মানে হল যে, আয় যত বেশি হবে, করের হারও তত বেশি হবে। ব্যক্তি এবং ব্যবসায়ীদের জন্য ভিন্ন ভিন্ন কর হার, ছাড়, অব্যাহতি এবং শর্ত রয়েছে। এই নিবন্ধে আমরা বাংলাদেশে আয়কর হিসাবের পদ্ধতি, কীভাবে কর নির্ধারণ করা হয়, কর ছাড় এবং কিভাবে আয়কর রিটার্ন ফাইল করতে হয়, তা বিস্তারিতভাবে আলোচনা করব।

বাংলাদেশে আয়কর সংক্রান্ত সাধারণ ধারণা

বাংলাদেশে আয়কর বিভিন্ন উৎস থেকে নেয়া হয়, যেমন: চাকরির আয়, ব্যবসার আয়, লভ্যাংশ, ভাড়া আয়, সুদ আয় ইত্যাদি। কর হার প্রগতিশীল হওয়ায়, আয় বাড়ানোর সাথে সাথে করের হারও বৃদ্ধি পায়। সরকার ব্যক্তি এবং ব্যবসায়ীদের জন্য বিভিন্ন ছাড় এবং কর অব্যাহতি দিয়ে থাকে, যা তাদের করের পরিমাণ কমাতে সহায়তা করে। সঠিক আয়কর পরিকল্পনা এবং আইন সম্পর্কে ভালো ধারণা রাখা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, যাতে আইন মেনে চলা যায় এবং করের পরিমাণ কমানো যায়।

ব্যক্তি করদাতাদের জন্য আয়কর হিসাবের পদ্ধতি

ব্যক্তি করদাতাদের জন্য আয়কর হিসাব নির্ধারণ করার একটি প্রক্রিয়া রয়েছে। এটি মূলত মোট আয় নির্ধারণ, ছাড় ও অব্যাহতি প্রয়োগ, করযোগ্য আয় বের করা এবং শেষমেশ কর হার প্রয়োগ করার মাধ্যমে হিসাব করা হয়।

১. মোট আয় নির্ধারণ

মোট আয় হলো যে সকল আয়ের উৎস থেকে আপনি আয় করেছেন সেগুলোর সমষ্টি। এগুলোর মধ্যে অন্তর্ভুক্ত:

  • চাকরির আয়: বেতন, ভাতা, এবং অন্যান্য সুবিধাদি।
  • ব্যবসায়িক আয়: ব্যবসার লাভ বা নিজস্ব আয়।
  • সুদ আয়: ব্যাংক অ্যাকাউন্ট বা সঞ্চয়পত্র থেকে পাওয়া সুদ।
  • ভাড়া আয়: সম্পত্তি ভাড়া দিয়ে পাওয়া আয়।
  • লভ্যাংশ: শেয়ার বা মিউচুয়াল ফান্ড থেকে পাওয়া আয়।
  • অন্যান্য আয়: যেমন, মূলধনী লাভ (Capital Gains) বা বিদেশি আয় ইত্যাদি।

২. ছাড় এবং অব্যাহতি প্রয়োগ

মোট আয় নির্ধারণ করার পর, আপনি কতটুকু আয় কর থেকে ছাড় বা অব্যাহতি পেতে পারেন, তা নির্ধারণ করতে হবে। কিছু সাধারণ ছাড় ও অব্যাহতি হলো:

  • বিনিয়োগ কর ঋণ: সরকার অনুমোদিত সিকিউরিটি, বন্ড বা মিউচুয়াল ফান্ডে বিনিয়োগ করলে আপনি এই বিনিয়োগের একটি অংশ কর ঋণ হিসেবে কাটাতে পারেন।
  • পেনশন তহবিলে অবদান: পেনশন বা প্রভিডেন্ট ফান্ডে অবদান রাখলে সেটি করযোগ্য আয় থেকে বাদ পড়বে।
  • চিকিৎসা খরচ: কিছু চিকিৎসা খরচ যেমন স্বাস্থ্য বিমার প্রিমিয়াম বা নির্দিষ্ট চিকিৎসা খরচ কমানো যেতে পারে।
  • শিক্ষা খরচ: কিছু ক্ষেত্রে, বিশেষ করে উচ্চশিক্ষার জন্য খরচ বাদ পড়তে পারে।

অব্যাহতি পাওয়া আয় গুলোর মধ্যে রয়েছে:

  • কৃষি আয়: কৃষি কার্যক্রম থেকে আয় সাধারণত করমুক্ত থাকে।
  • লভ্যাংশ: কিছু উৎস থেকে পাওয়া লভ্যাংশ করমুক্ত থাকতে পারে।
  • সরকারি বন্ডের সুদ: সরকারি বন্ড থেকে পাওয়া সুদ সাধারণত করমুক্ত।

৩. করযোগ্য আয় নির্ধারণ

করযোগ্য আয় হলো মোট আয় থেকে সমস্ত ছাড় ও অব্যাহতি বাদ দেওয়ার পর যা থাকে, সেটি করযোগ্য আয় হিসেবে গণ্য হবে।

করযোগ্য আয় = মোট আয় – ছাড় ও অব্যাহতি

৪. কর স্ল্যাব অনুযায়ী কর প্রযোজ্য করা

করযোগ্য আয় নির্ধারণের পর, কর নির্ধারণের জন্য স্ল্যাব অনুযায়ী কর হার প্রযোজ্য করতে হবে। বাংলাদেশে ব্যক্তি করদাতাদের জন্য ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরের কর স্ল্যাব এবং হার নিম্নরূপ:

  • ৩,০০,০০০ টাকা পর্যন্ত: কোন কর নেই
  • ৩,০০,০০১ টাকা থেকে ৬,০০,০০০ টাকা পর্যন্ত: ১০%
  • ৬,০০,০০১ টাকা থেকে ১২,০০,০০০ টাকা পর্যন্ত: ১৫%
  • ১২,০০,০০১ টাকা থেকে ৩০,০০,০০০ টাকা পর্যন্ত: ২০%
  • ৩০,০০,০০১ টাকা থেকে ৭৫,০০,০০০ টাকা পর্যন্ত: ২৫%
  • ৭৫,০০,০০০ টাকার উপরে: ৩০%

যেমন, যদি আপনার করযোগ্য আয় ১০,০০,০০০ টাকা হয়, তাহলে করের হিসাব হবে:

  • প্রথম ৩,০০,০০০ টাকা করমুক্ত থাকবে।
  • পরবর্তী ৩,০০,০০০ টাকা (৩,০০,০০১ টাকা থেকে ৬,০০,০০০ টাকা পর্যন্ত) ১০% হারে কর হবে, অর্থাৎ ১০% × ৩,০০,০০০ টাকা = ৩০,০০০ টাকা।
  • পরবর্তী ৪,০০,০০০ টাকা (৬,০০,০০১ টাকা থেকে ১০,০০,০০০ টাকা পর্যন্ত) ১৫% হারে কর হবে, অর্থাৎ ১৫% × ৪,০০,০০০ টাকা = ৬০,০০০ টাকা।

মোট কর = ৩০,০০০ টাকা + ৬০,০০০ টাকা = ৯০,০০০ টাকা

৫. কর ঋণ এবং পূর্ব প্রদত্ত কর প্রয়োগ

কর ঋণ (যেমন, দান দানের জন্য কর ঋণ বা বিনিয়োগ কর ঋণ) এবং পূর্ব প্রদত্ত কর (যেমন, বেতন থেকে কাটা কর বা অগ্রিম আয়কর) কমানো যেতে পারে।

যেমন:

  • অগ্রিম আয়কর: ৪০,০০০ টাকা
  • দান কর ঋণ: ১০,০০০ টাকা

মোট করের দায়িত্ব = ৯০,০০০ টাকা – ৪০,০০০ টাকা – ১০,০০০ টাকা = ৪০,০০০ টাকা

অতএব, ব্যক্তি ৪০,০০০ টাকা কর পরিশোধ করবে।

ব্যবসায়ীদের জন্য আয়কর হিসাব

ব্যবসায়ীদের জন্য আয়কর হিসাব ব্যক্তিগত করদাতাদের থেকে কিছুটা ভিন্ন। ব্যবসায়িক আয়, খরচ, অনুমোদিত ছাড় এবং করহার অনুযায়ী হিসাব করা হয়।

১. মোট আয় নির্ধারণ

ব্যবসায়ীদের মোট আয় হতে পারে:

  • বিক্রয় বা সেবার আয়: ব্যবসা থেকে আয়।
  • অন্যান্য আয়: লগ্নি আয়, সম্পত্তি বিক্রির লাভ ইত্যাদি।

২. ছাড় এবং অব্যাহতি

ব্যবসায়ীরা তাদের ব্যবসায়িক খরচ, যেমন: বেতন, অফিসের ভাড়া, কাঁচামাল ইত্যাদি আয়কর হিসাব থেকে বাদ দিতে পারেন। এছাড়া, ব্যবসায়িক সম্পদের ওপর অবচয় (Depreciation) এবং সুদ খরচও ছাড় হিসেবে বিবেচিত হতে পারে।

৩. কর হার প্রযোজ্য করা

ব্যবসায়ের জন্য কর হার সাধারণত এইভাবে থাকে:

  • পাবলিক লিস্টেড কোম্পানি: ২৫%
  • প্রাইভেট কোম্পানি: ৩২.৫%
  • অ-নিবাসী কোম্পানি: ৩৭.৫%

৪. কর ঋণ এবং পূর্ব প্রদত্ত কর প্রয়োগ

ব্যবসায়ীদেরও কর ঋণ এবং পূর্ব প্রদত্ত করের সুবিধা নিতে হবে।

আয়কর রিটার্ন ফাইলিং প্রক্রিয়া

আয়কর রিটার্ন ফাইলিং একটি বাধ্যতামূলক প্রক্রিয়া, এবং প্রত্যেক করদাতাকে নভেম্বর ৩০ এর মধ্যে তাদের আয়কর রিটার্ন জমা দিতে হবে (যা জুন ৩০ তারিখে শেষ হয়)। এটি অনলাইনে বা স্থানীয় আয়কর অফিসে জমা দেওয়া যায়।

অবহেলার জন্য শাস্তি

যদি কেউ আয়কর রিটার্ন সময়মতো জমা না দেয় বা কম আয়কর প্রদর্শন করে, তাহলে তা শাস্তির আওতায় আসতে পারে। শাস্তির মধ্যে অন্তর্ভুক্ত হতে পারে:

  • বিলম্ব ফি: সময়মতো রিটার্ন না দিলে জরিমানা।
  • অধিক আয়কর প্রদান: আয়কর কম দেখালে অতিরিক্ত অর্থ প্রদান হতে পারে।
  • সুদ: অপরিশোধিত করের ওপর সুদ ধার্য হতে পারে।
  • বিচারিক ব্যবস্থা: খারাপ পরিস্থিতিতে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হতে পারে।

উদাহরণ ১: সাধারণ বেতন হিসাব এবং ঈদ বোনাস

মোট আয়

মাসিক বেতন: ৫০,০০০ টাকা
ঈদ বোনাস: ২০,০০০ টাকা (এটি বছরজুড়ে প্রদান করা হয়)

মোট গ্রস আয় (বার্ষিক) = (৫০,০০০ টাকা × ১২ মাস) + ২০,০০০ টাকা (ঈদ বোনাস) = ৬,০০,০০০ টাকা + ২০,০০০ টাকা = ৬,২০,০০০ টাকা

ধাপ ১: কর্তন নির্ধারণ করা (যদি প্রযোজ্য হয়)

বিনিয়োগ কর ক্রেডিট (যেমন, ৩০,০০০ টাকা সরকারী বন্ডে বিনিয়োগ): ৩০,০০০ টাকা
প্রভিডেন্ট ফান্ড কন্ট্রিবিউশন (যেমন, প্রতি মাসে ৫,০০০ টাকা): ৬০,০০০ টাকা (বাৎসরিক)

মোট কর্তন = ৩০,০০০ টাকা + ৬০,০০০ টাকা = ৯০,০০০ টাকা

ধাপ ২: করযোগ্য আয় হিসাব করা

করযোগ্য আয় = মোট গ্রস আয় – কর্তন
= ৬,২০,০০০ টাকা – ৯০,০০০ টাকা = ৫,৩০,০০০ টাকা

ধাপ ৩: কর স্ল্যাব প্রয়োগ করা

  • ৩,০০,০০০ টাকার মধ্যে: কোন কর নেই
  • ৩,০০,০০১ টাকার থেকে ৫,৩০,০০০ টাকার মধ্যে: করযোগ্য পরিমাণ = ৫,৩০,০০০ টাকা – ৩,০০,০০০ টাকা = ২,৩০,০০০ টাকা
    ১০% কর = ১০% × ২,৩০,০০০ টাকা = ২৩,০০০ টাকা

ধাপ ৪: চূড়ান্ত কর পরিশোধযোগ্য হিসাব করা

মোট কর পরিশোধযোগ্য = ২৩,০০০ টাকা

উপসংহার: ব্যক্তি ২৩,০০০ টাকা কর পরিশোধ করবেন।


উদাহরণ ২: উচ্চ আয় এবং একাধিক আয় উৎস (বেতন + ব্যবসা আয়)

মোট আয়

বেতন: ৭০,০০০ টাকা/মাস
ব্যবসা আয়: ২,০০,০০০ টাকা (বাৎসরিক)
ঈদ বোনাস: ৫০,০০০ টাকা

মোট গ্রস আয় = (৭০,০০০ টাকা × ১২) + ২,০০,০০০ টাকা + ৫০,০০০ টাকা = ৮,৪০,০০০ টাকা + ২,০০,০০০ টাকা + ৫০,০০০ টাকা = ১০,৯০,০০০ টাকা

ধাপ ১: কর্তন নির্ধারণ করা

অনুমোদিত সিকিউরিটিতে বিনিয়োগ: ৪০,০০০ টাকা
অবসর ফান্ডে কন্ট্রিবিউশন: ৫০,০০০ টাকা

মোট কর্তন = ৪০,০০০ টাকা + ৫০,০০০ টাকা = ৯০,০০০ টাকা

ধাপ ২: করযোগ্য আয় হিসাব করা

করযোগ্য আয় = মোট গ্রস আয় – কর্তন
= ১০,৯০,০০০ টাকা – ৯০,০০০ টাকা = ১০,০০,০০০ টাকা

ধাপ ৩: কর স্ল্যাব প্রয়োগ করা

  • ৩,০০,০০০ টাকার মধ্যে: কোন কর নেই
  • ৩,০০,০০১ টাকার থেকে ৬,০০,০০০ টাকার মধ্যে: করযোগ্য পরিমাণ = ৩,০০,০০০ টাকা × ১০% = ৩০,০০০ টাকা
  • ৬,০০,০০১ টাকার থেকে ১০,০০,০০০ টাকার মধ্যে: করযোগ্য পরিমাণ = ৪,০০,০০০ টাকা × ১৫% = ৬০,০০০ টাকা

মোট কর = ৩০,০০০ টাকা + ৬০,০০০ টাকা = ৯০,০০০ টাকা

ধাপ ৪: চূড়ান্ত কর পরিশোধযোগ্য হিসাব করা

মোট কর পরিশোধযোগ্য = ৯০,০০০ টাকা

উপসংহার: ব্যক্তি ৯০,০০০ টাকা কর পরিশোধ করবেন।


উদাহরণ ৩: নিম্ন আয় এবং করযোগ্য বেতন ঈদ বোনাস সহ

মোট আয়

মাসিক বেতন: ২০,০০০ টাকা
ঈদ বোনাস: ১৫,০০০ টাকা

মোট গ্রস আয় = (২০,০০০ টাকা × ১২) + ১৫,০০০ টাকা = ২,৪০,০০০ টাকা + ১৫,০০০ টাকা = ২,৫৫,০০০ টাকা

ধাপ ১: কর্তন নির্ধারণ করা

বিনিয়োগ কর ক্রেডিট (যেমন, ১০,০০০ টাকা বিনিয়োগ): ১০,০০০ টাকা

মোট কর্তন = ১০,০০০ টাকা

ধাপ ২: করযোগ্য আয় হিসাব করা

করযোগ্য আয় = মোট গ্রস আয় – কর্তন
= ২,৫৫,০০০ টাকা – ১০,০০০ টাকা = ২,৪৫,০০০ টাকা

ধাপ ৩: কর স্ল্যাব প্রয়োগ করা

  • ৩,০০,০০০ টাকার মধ্যে: কোন কর নেই

মোট কর = কোন কর নেই (কারণ আয় করযোগ্য সীমার নিচে)

উপসংহার: ব্যক্তি কোন কর পরিশোধ করবেন না, কারণ আয় করযোগ্য সীমার নিচে।


উদাহরণ ৪: ভাড়ার আয় এবং বেতন

মোট আয়

বেতন: ৪০,০০০ টাকা/মাস
ভাড়ার আয়: ১,২০,০০০ টাকা (বাৎসরিক)
ঈদ বোনাস: ৩০,০০০ টাকা

মোট গ্রস আয় = (৪০,০০০ টাকা × ১২) + ১,২০,০০০ টাকা + ৩০,০০০ টাকা = ৪,৮০,০০০ টাকা + ১,২০,০০০ টাকা + ৩০,০০০ টাকা = ৬,৩০,০০০ টাকা

ধাপ ১: কর্তন নির্ধারণ করা

সরকারী বন্ডে বিনিয়োগ: ২০,০০০ টাকা
প্রভিডেন্ট ফান্ডে কন্ট্রিবিউশন: ৩০,০০০ টাকা

মোট কর্তন = ২০,০০০ টাকা + ৩০,০০০ টাকা = ৫০,০০০ টাকা

ধাপ ২: করযোগ্য আয় হিসাব করা

করযোগ্য আয় = মোট গ্রস আয় – কর্তন
= ৬,৩০,০০০ টাকা – ৫০,০০০ টাকা = ৫,৮০,০০০ টাকা

ধাপ ৩: কর স্ল্যাব প্রয়োগ করা

  • ৩,০০,০০০ টাকার মধ্যে: কোন কর নেই
  • ৩,০০,০০১ টাকার থেকে ৬,০০,০০০ টাকার মধ্যে: করযোগ্য পরিমাণ = ২,০০,০০০ টাকা × ১০% = ২০,০০০ টাকা

মোট কর = ২০,০০,০০০ টাকা

উপসংহার: ব্যক্তি ২০,০০০ টাকা কর পরিশোধ করবেন।


এভাবে আপনি আরও উদাহরণ দিয়ে কর হিসাব করতে পারেন।

ঈদ বোনাসের কর পরিশোধ কিভাবে হয়?

উপরের সমস্ত উদাহরণে, ঈদ বোনাসকে মোট আয়ের অংশ হিসেবে গণনা করা হয়েছে। এটি আলাদা কোন কর হার এর অধীনে আসে না এবং বার্ষিক মোট আয় হিসাব করার সময় এটি অন্তর্ভুক্ত হয়।

ঈদ বোনাস = করযোগ্য আয়: যদি ঈদ বোনাস বছরজুড়ে প্রদান করা হয়, তাহলে এটি মোট আয়ের সাথে যোগ করা হয়।

এরপর মোট করযোগ্য আয় হিসাব করা হয়, যা ঈদ বোনাসসহ অন্যান্য আয়ের সমষ্টি।

ঈদ বোনাসের উপর কর নির্ভর করে মোট করযোগ্য আয়ের উপর, এবং এটি সাধারণ প্রগ্রেসিভ কর হারের অধীনে আসতে পারে।

সংক্ষেপে, ঈদ বোনাস সাধারণ আয়ের মতোই গণনা করা হয় এবং এটি ব্যক্তি বা সংস্থার মোট আয়ের ভিত্তিতে যথাযথভাবে করযোগ্য হয়ে পড়ে।

উপসংহার

বাংলাদেশে আয়কর হিসাব একটি সুসংগত প্রক্রিয়া, যা মোট আয় নির্ধারণ, ছাড় ও অব্যাহতি প্রয়োগ, করযোগ্য আয় বের করা, এবং কর স্ল্যাব অনুযায়ী কর প্রযোজ্য করা এসব পদক্ষেপের মাধ্যমে সম্পন্ন হয়। নিয়ম মেনে চলা, সর্বশেষ আইন সম্পর্কে জানা এবং সঠিকভাবে আয়কর পরিকল্পনা করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ব্যক্তিগত এবং ব্যবসায়িক করদাতারা সঠিকভাবে এই প্রক্রিয়াগুলো অনুসরণ করে তাদের করের পরিমাণ কমাতে এবং জাতীয় উন্নয়নে অবদান রাখতে পারে।

This post is also available in: English

Related Articles

টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং ছাত্রদের জন্য বৃত্তি সুযোগ অন্বেষণ

অনুদান এবং বৃত্তি নিশ্চিত করা আন্তর্জাতিক শিক্ষা অর্জনের আর্থিক বোঝাকে উল্লেখযোগ্যভাবে উপশম করতে পারে। একটি সাধারণ ভুল ধারণা থাকা সত্ত্বেও যে আন্তর্জাতিক ছাত্রদের জন্য স্কলারশিপ…

প্রতি ছয় মাসে ০.৫ শতাংশ কমবে পোশাক রপ্তানিতে নগদ সহায়তা

প্রতি ছয় মাসে ০.৫ শতাংশ কমবে পোশাক রপ্তানিতে নগদ সহায়তা ২০২৬ সালের জুলাই মাসে রপ্তানিতে দেওয়া নগদ প্রণোদনার পুরোটা প্রত্যাহার করে নেবে সরকার। ২০২৬ সালের…

ক্যাম্পাস কমিউনিটিতে চাকরির সুযোগ শেয়ার করা কেন গুরুত্বপূর্ণ?

আজকের প্রতিযোগিতামূলক চাকরি বাজারে সঠিক কর্মসংস্থান খুঁজে পাওয়া আগের চেয়ে অনেক বেশি চ্যালেঞ্জিং। তবে, ছাত্র এবং নিয়োগকর্তাদের মধ্যে সেতু তৈরির একটি কার্যকর উপায় হলো ক্যাম্পাস…

অ্যালামনাই: শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সম্পদ এবং সাফল্যের চাবিকাঠি

অ্যালামনাই যেকোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের জন্য একটি অমূল্য সম্পদ। তারা প্রতিষ্ঠানের ঐতিহ্য, সাফল্য এবং সুনামের প্রতীক। একটি দৃঢ় অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশন গড়ে তোলার মাধ্যমে, প্রতিষ্ঠানগুলি এই সম্পদকে কাজে…

ইন্টার্নশিপ গাইডলাইন।। পার্ট ১ || Factory Selection

সামনেই আমাদের অষ্টম ব্যাচের ইন্টার্ন। গতবছরে এই সময়ে যখন আমাদের ইন্টার্ন আসলো তখন ইন্টার্নে যাওয়ার আগে কিংবা ইন্টার্ন এ ঢুকে আমাদের করনীয় কি তা সম্পর্কে…

Responses

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

× Chat